রুকইয়াহ হলো ইসলামী চিকিৎসার একটি পদ্ধতি যা আল্লাহর নাম, কোরআনের আয়াত ও রাসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী দোয়া ও বাক্য পাঠ করে রোগ ও অশুভ শক্তি দূর করার প্রক্রিয়া। এটি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সব ধরনের সমস্যা নিরাময়ে কার্যকর।
রুকইয়াহ-এর কাজ মূলত আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং শারীরিক রোগগুলির চিকিৎসা করা। রুকইয়াহ-এর একটি সংজ্ঞা হলো, এটি এমন কাজ, কথা এবং উপায়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করা, যা আধ্যাত্মিক রোগ এবং সাধারণভাবে অন্যান্য রোগের নিরাময়ের পথ দেখায়
ক) জাদু ও দুষ্ট শক্তি সংক্রান্ত সমস্যা
হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা
অযাচিত ঘুম বা ঘুমে অসুবিধা
ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনে অপ্রত্যাশিত সমস্যা
সম্পর্ক বা ব্যবসায়ে হঠাৎ বাধা
খ) হসাদ (বদ নজর) ও ঈর্ষা
অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক
মানসিক চাপ, আত্মবিশ্বাসের অভাব
শারীরিক দুর্বলতা বা হঠাৎ অসুস্থতা
গ) শারীরিক রোগ
দীর্ঘমেয়াদী মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা
চোখ, কানে বা দেহে হঠাৎ ব্যথা
অজানা জ্বালা, জ্বালা বা অস্বাভাবিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যথা
পেটের অসুবিধা, হজমের সমস্যা
কিছু অচিকিৎসাযোগ্য রোগে সহায়ক হিসাবে
ঘ) মানসিক ও আত্মিক সমস্যা
হতাশা, ভয়, দুশ্চিন্তা
আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া
অতিরিক্ত রাগ, জেদ বা অস্থিরতা
ক) নিজে নিজে (Self-Ruqyah)
নির্দিষ্ট আয়াত ও দোয়া শেখা।
যেমন: আয়াতুল কুরসী, তিন শেষ সূরা (ইখলাস, ফালাক, নাস)
দৈনন্দিন জীবনযাপনে পাঠ ও পানি, তেল বা গরম পানিতে সংযুক্ত করে ব্যবহার করা।
বিশ্বাস ও মনোযোগ ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খ) সরাসরি রুকইয়াহ সেশন
রাকী বা অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়।
আক্রান্ত ব্যক্তি বসে বা শুয়ে আয়াত ও দোয়া শোনে।
প্রয়োজনে পানি বা তেল ব্যবহার করে রুকইয়াহ করা হয়।
সেশন সাধারণত দীর্ঘ হতে পারে।
দ্রুত প্রভাব: আয়াতের শব্দ ও দোয়ার শক্তি সরাসরি শুনলে মানসিক ও শারীরিক প্রভাব দ্রুত অনুভূত হয়।
নিয়মিত তদারকি: রাকী রোগীর প্রতিক্রিয়া ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
বিশেষ রোগের জন্য বিশেষ পদ্ধতি: জাদু বা শক্তিশালী হসাদের ক্ষেত্রে সঠিক আয়াত ও দোয়া নির্বাচন করা যায়।
মানসিক শান্তি: ব্যক্তির মন ও আত্মায় বিশ্বাস এবং আস্থা বৃদ্ধি পায়।
পারিবারিক ও পরিবেশগত দূষণ কমানো: ঘরে বা পারিপার্শ্বিক এলাকায় পজিটিভ এনার্জি বৃদ্ধি পায়।
রুকইয়াহ কোনরকম কুসংস্কার বা অনৈতিক কাজ নয়; এটি আল্লাহর নামের মাধ্যমে নিরাময়।
গুরুতর শারীরিক রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ সাথে রাখা উচিত।
নিয়মিত নামাজ, তাওবা, কোরআন পাঠ ও সাদাকা রোগ প্রতিরোধ ও আর্থিক/পারিবারিক সমস্যা কমাতে সহায়ক।
বিশ্বাস ও ধৈর্য অপরিহার্য; একবারে সব সমস্যা সমাধান আশা করা ঠিক নয়।